জামাআতে সালাতের গুরুত্ব ; প্রেক্ষিত বর্তমান সমাজ


জামাআতের গুরুত্ব, পরিপ্রেক্ষিত বর্তমান সমাজ

আল্লাহ তাআলা সালাতের মর্যাদা সমুন্নত করেছেন। পবিত্র কুরআনের বহু জয়গায়  সালাত আদায়ের নির্দেশ দিয়েছেন । সালাতের প্রতি যত্নবান ও  জামাআতভুক্ত হয়ে  সালাত আদায়ের আদেশ করেছেন। সালাতকে  গুরুত্বপূর্ন ইবাদত হিসেবে আখ্যায়িত করেছেন ও আনুগত্যের বহিঃপ্রকাশ হিসাবে সাব্যস্ত করেছেন। আল্লাহ তাআলা বলেন:—

وأقيموا الصلاة وآتوا الزكاة واركعوا مع الراكعين – سورة البقرة :43

আর সালাত কায়েম কর, যাকাত প্রদান কর এবং সালাতে রুকুকারীদের সাথে রুকু কর। (বাকারা-৪৩) আর এর প্রতি অবমাননা এবং তা আদায়ে অলসতা মুনাফিকের আলামত হিসেবে উল্লেখ করেছেন। ইরশাদ হচ্ছে :—

إن المنافقين يخادعون الله وهو خادعهم وإذا قاموا إلى الصلاة قاموا كسالى – سورة النساء :142

মুনাফিকরা অবশ্যই প্রতারণা করছে আল্লাহর সাথে অথচ তারা প্রকারান্তরে নিজেদেরই প্রতারিত করছে । বস্তুতঃ তারা যখন সালাতে দাড়ায় তারা  দাড়ায় একান্ত শিথিলভাবে।   (সূরা নিসা-১৪২) অন্যত্র ইরশাদ হচ্ছে :—

ولايأتون الصلاة إلا وهم كسالى . سورة التوبة: 54

তারা সালাতে আসে আলস্যভরে (সূরা তওবা : ৫৪)

Continue reading

ইসলামে সালাতের গুরুত্ব


লেখক: জাকিরুল্লাহ আবুল খায়ের
تأليف: ذاكر الله أبو الخير
সম্পাদনা : আব্দুল্লাহ শহীদ আব্দুর রহমান
مراجعة: عبد الله شهيد عبد الرحمن

ইসলাম প্রচার ব্যুরো, রাবওয়াহ রিয়াদ
المكتب التعاوني للدعوة وتوعية الجاليات بالربوة بمدينة الرياض

1429 – 2008
*************


সালাতের গুরুত্ব:
*********
আল্লাহ মানুষকে তার এবাদতের জন্যেই সৃষ্টি করেছেন। শুধু মানুষ নয় ; মানুষ ও জ্বীন-উভয় জাতিকে আল্লাহ তার এবাদত তথা তার দাসত্বের জন্য সৃষ্টি করেছেন। আল্লাহ বলেন-
وَمَا خَلَقْتُ الْجِنَّ وَالْإِنْسَ إِلَّا لِيَعْبُدُونِ (الذاريات :56)
অর্থাৎ আমি মানব ও জ্বীন জাতিকে একমাত্র আমার এবাদতের জন্য সৃষ্টি করেছি।
ফলে তিনি মানুষের জন্য কিছু দৈহিক, আত্মিক ও আর্থিক এবাদতের প্রচলন করেছেন।
দৈহিক এবাদতের মাঝে বিশেষ গুরুত্বপূর্ণ ও মহান এবাদত হল সালাত। সালাত এমন একটি এবাদত যাকে আল্লাহ তার মাঝে এবং তার বান্দার মাঝে সম্পর্ক স্থাপনের মাধ্যম সাব্যস্ত করেছেন।
সালাতের মাধ্যমে একজন মানুষ আল্লাহর সাথে দেয়া প্রতিশ্রুতির বার বার প্রতিফলন ঘটায়। সে তার প্রভু বা স্রষ্টাকে বুঝাতে সক্ষম হয় যে, সে তার প্রতিশ্রুতি পালন করে যাচ্ছে। এ সালাতের মাধ্যমেই মানুষ আল্লাহর নৈকট্য লাভ করে। আল্লাহর সাথে মানুষের সম্পর্কের বন্ধন সুদৃঢ় ও মজবুত হয়। ইহকাল ও পরকালের মুক্তির পথ কংটকমুক্ত হয়। সালাত ব্যক্তি, পরিবার, সামাজিক ও রাষ্ট্রীয় জীবনে শান্তি, শৃঙ্খলা, ভ্রাতৃত্ব ও মমতাবোধ ফিরিয়ে আনে। গড়ে উঠে সামাজিক ঐক্য। সালাতের মাধ্যমে ছগীরা তথা ছোট ছোট গুনাহগুলো হতে পরিত্রাণ লাভ করে এবং দুনিয়া ও আখেরাতের কল্যাণ লাভ হয়।

Continue reading

চাঁদ দেখা ও সন্দেহের দিন রোজা রাখা প্রসঙ্গে শরীয়তের বিধান


রোজা ইসলামি শরিয়তের শুধু গুরুত্বপূর্ণ বিধানই নয় বরং ইসলামের পাঁচ স্তম্ভের একটি গুরুত্বপূর্ণ স্তম্ভ। সারা বছরে শুধু রমজান মাসেই রোজা রাখা ফরজ।

তবে রোজা ফরজ হওয়ার সর্ম্পক কেবল চান্দ্র মাসের সাথে। আর ইসলামি শরিয়তের বিধান অনুসারে মাসের হিসাবও হয় চাঁদের হিসাব অনুসারে। তাই রোজার শুরু এবং শেষ চাঁদ দেখা এবং না দেখার সাথেই সম্পৃক্ত। চাঁদ দেখা গেলে রোজা রাখতে হবে এবং চাঁদ দেখা গেলে রোজা ছাড়তে হবে ।

এটা দ্বীন ইসলামের বিশেষ একটি বৈশিষ্ট্য। এ ধরনের বৈশিষ্ট্য ইসলামের সার্বজনীনতা ও গ্রহণযোগ্যতা প্রমাণ করে, এবং তা সমগ্র দুনিয়ার সকল মানুষের জন্য এবং সর্ব কালের জন্য প্রজোয্য বলে নির্দেশ করে।

কারণ, বর্তমান দুনিয়ার মানুষ সাধারণত বস্তুর্নিভর। তাই তারা প্রত্যক্ষ কোন মাধ্যম বা চাক্ষুষ কোন প্রমাণকে যত তাড়াতাড়ি বা সহজে মেনে নেয় অন্য কিছুকে ততটা মেনে নেয় না ।

ফলে আল্লাহ চাঁদ দেখার সাথে ইসলামের অনেক ইবাদতকেই সম্পৃক্ত করেছেন।

عن ابن عمر رضي الله عنهما- قال: تراءى الناس الهلال؛ فأخبرت رسول الله صلي الله عليه و سلم أني رأيـته، فصـامه وأمـر النـاس بصـيامه رواه أبوداود(2342)

ইবনে ওমর রা. হতে বর্ণিত : তিনি বলেন, মানুষ সম্মিলিতভাবে চাঁদ দেখতে লাগল, তাদের মাঝে আমি রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামকে এসে সংবাদ প্রদান করি যে, আমি চাঁদ দেখেছি। এ সংবাদের উপর ভিত্তি করে রাসূল নিজে রোজা রাখেন, এবং সকলকে রোজা রাখার নির্দেশ দেন। আবু দাউদ : ২৩৪। Continue reading