ডা. জাকির নাইকের সাক্ষাৎকার


(সাক্ষাৎকারটি নিয়েছিলেন মুহাম্মাদ তাওহীদ আহমেদ । স্থান; আলিগড় বিশ্ববিদ্যালয়)

তাওহীদ আহমেদঃ স্যার, আপনি একজন সফল ডাক্তার হওয়া সত্যেও সেই পেশা ত্যাগ করে; আপনার সকল সময়, শ্রম এই দাওয়াহ’র কাজেই সমর্পন করে চলেছেন । এত বড় কৃতিত্বের জন্য কাদের তরফ থেকে সবচেয়ে সহযোগিতাপুর্ন প্রভাবের কথা আজও অনুভব করেন ?
ডা. জাকির নাইকঃ  হ্যাঁ, এই দাওয়াহ’র কাজে অতিনিবেশকরণে যে ব্যক্তিত্ব আমাকে অনুপ্রাণিত করেন তিনি হলেন শেখ আহমেদ দিদাত । তিনি একবার মুম্বাই এসেছিলেন তখন আমি এম.বি.বি.এস দ্বিতীয় বর্ষের ছাত্র । সেই সময় আমি তাঁর বক্তৃতা শুনি এবং স্বয়ং তাঁর সাথে দেখাও করি ।আর এর পরেই তাঁর কাছ থেকে ভীষণভাবে অনুপ্রানিত হয় তথা এই দাওয়াহ মুলক কর্মকান্ডের ময়দানে নেমে পড়ার জন্য খুবই প্রভাবিত হয়ে পরি । সুতরাং সেই মতো আমি আমার স্মাতক স্তরে পাঠরত দিন গুলিতেই শুরু করে দিয় দাওয়াহ’র কাজ । এমনকি আমাদের ওই মেডিক্যাল কলেজেও তা জারি রাখি । এরপর আমি যখন আমার ডাক্তারি শিক্ষা সফল্ভাবে সমাপন করি, তখন আমি আমার অর্ধেক সময় ব্যয় করতাম দাওয়াহ’র কাজে আর বাকি অর্ধেক ওই ডাক্তারি পেশায় । তারপর ধীরে ধীরে আমি মাত্র দু-ঘন্টা করে সময় দিতে লাগলাম আমাদের সেই ক্লিনিকে, যেটা পুর্ব থেকেই আমার বাবা ও দাদা দু-জনেই পেশাদার ডাক্তার হিসেবে পরিচালিত করে আসছেন সফল্ভাবে । যাইহোক এরপর আলহামদুলিল্লাহ সেই দু-ঘন্টা ব্যতিত বাকী সময়টা তখন এই দাও’আর কাজেই উৎসর্গ করার চেষ্টা করতাম । কিন্তু সুম্মাআলহামদুলিল্লাহ বিগত ১৯৯৫ থেকে আমি সম্পুর্নভাবে দাও’আর কাজেই ব্যতিব্যস্ত । হ্যাঁ, তবে প্রারম্ভিক দিন গুলিতে আমার মমতাময়ী মা চেয়ে ছিলেন যে আমি যেন আগামিতে (পৃথিবী বিখ্যাত ডাক্তার) ডঃ ক্রিস্টিয়ান বার্নাড এর মতোই একজন সফল ও বিখ্যাত ডাক্তার হয় । কিন্তু পরবর্তীতে আমি যখন আমার বেশির ভাগ সময় দাও’আ তেই দিতে লাগলাম, তখন একদিন আমার মাকে জিজ্ঞেস করেছিলাম যে আপনি কোনটা পছন্দ করেন- হয় আমি ডঃ বার্নাড হয় নই আহমেদ দিদাত ? তো মা বলেছেন, জাকির তুমি দুটোই হওয়ার চেষ্টা কর । অথচ আজ সেই একই প্রশ্ন আমার মার সামনে রাখলে তিনি বলেন, আজ আমি একজন শেখ দিদাতের জন্য সহস্র ক্রিস্টিয়ান বার্নাড ত্যাগ করতে পারি ।
তাওহীদ আহমেদঃ আপনার পরিবারের সমন্ধে আমাদের আরও কিছু বলুন ?
ডা. জাকির নাইকঃ আমার তিন জন  সন্তান, এক ছেলে দুই মেয়ে । আর আমি এমনই এক অতিশয় ধর্মপ্রান পরিবারের সাথে যুক্ত রয়েছি, যেখানে একটা আদর্শ পরিবারের তরফ থেকে যতটা সম্ভব সমর্থন লাগে তার প্রায় সবটুকুই আমি পেয়ে এসেছি আলহামদুলিল্লাহ । আর এই সমর্থনের পরিপেক্ষিতেই আজ আমার সহধর্মনীও একজন ধার্মীক মহিলা স্বরুপ আমাদের ‘ইসলামিক রিসার্চ ফাউন্ডেশান’ এর মহিলা বিভাগের প্রধান তত্ত্বাবধায়ীকা রুপে দাও’আর কাজ চালিয়ে যাচ্ছেন ।
তাওহীদ আহমেদঃ আচ্ছা, আপনার কলেজ জীবনের ব্যাপারেও আমাদের কিছু বলুন ?
ডা. জাকির নাইকঃ আমার কলেজের দিন গুলিতে আমি বিশেষ করে আমাদের সম্মানিত-শ্রদ্ধেয় অধ্যাপক মহাদয়গণকে এই দাও’আর প্রতি যথেষ্ট কৌশলের সহিত আকৃষ্ট করার কাজ চালিয়ে যেতাম । আর এভাবেই ইসলামের মর্মবাণী তাঁদের মর্মস্থলে স্পর্শ করানোর চেষ্টা করতাম । যদিও এতে তাঁরা প্রথমে আমাকে দার্শনিক (?) বলেই ডাক হাঁক দিতেন, তবুও প্রকৃতপক্ষে আমাকে ঢ়েড় বেশি সম্মানও করতেন । আর না তাঁরা এজন্য আমাকে কখনো ফেল করিয়েছেন । এমনকি তাঁরা যদিও বা আমাকে ফেল করিয়ে দিতেন, তবুও আমি নিশ্চিন্ত থাকতাম এই ভেবে যে, এই অতিরিক্ত একটা বছর আল্লাহ তা’লা আমাকে দিয়েছেন যাতে আমি তাঁদেরকে আরও এক বছর দাও’য়াত দিতে পারি । এটাই হল আমার আল্লাহর প্রতি ইমান (বিশ্বাস) ।

Continue reading

ঠকানোর মানে যদি টাকা কম দেওয়া বুঝায়, তাহলে ইসলাম কাকে ঠকালো ? পুরুষকে না নারীকে ?


সম্পদ বন্টনে সবচেয়ে প্রচলিত যে কথা আছে সমাজে তা হল

“নারীরা পুরুষের অর্ধেক পায়।”

কিন্তু কয়টি ক্ষেত্রে?

মিসরের জাতীয় ফতোয়া বোর্ড কর্তৃক প্রচারিত এক ফতোয়ায় মিরাছের সম্পদ পাওয়ার ক্ষেত্রে নারী পুরুষের একটি তুলনামূলক পর্যালোচনা তুলে ধরা হয়েছে। তাতে যে বিস্ময়কর তথ্য এসেছে তার মাধ্যমে অনেকের চোখ খুলে যেতে পারে, বিবেক পেতে পারে নতুন খোরাক। ঐ পরিসংখ্যানে নারী কখন পুরুষের অর্ধেক পায়, আর কখন সমান পায়, আর কখন বেশি পায় তার বর্ণনা এসেছে অত্যন্ত পরিস্কারভাবে। লক্ষ্য করুন:

নারী কেবলমাত্র চার অবস্থায় পুরুষের অর্ধেক পায় :
১. মেয়ে ও নাতনী(ছেলের মেয়ে) ছেলে ও নাতী (ছেলের ছেলে) থাকা অবস্থায়।
২. ছেলে সন্তান ও স্বামী বা স্ত্রী না থাকলে “মা” পিতার অর্ধেক পায় ।
৩. “সহোদরা বোন” সহোদর ভাইয়ের সাথে ওয়ারিস হলে।
৪. “বৈমাত্রেয় বোন” বৈমাত্রেয় ভাইয়ের সাথে ওয়ারিস হলে।

Continue reading

কেন এত ভূমিকম্প হয়? এবং এ থেকে পরিত্রাণের উপায়


কয়েকদিন পরপরই মৃদু কম্পনে সারা দেশ কম্পিত হয়ে উঠছে, এগুলো বড় একটা কম্পন আসার আগে সতর্ককারী কম্পন। মহান আল্লাহ তাঁর বান্দাহদের সতর্ক করেন যাতে করে তারা অনুতপ্ত হয় এবং আল্লাহর পথে ফিরে আসে। চলুন দেখি কুরআন ও সহীহ হাদীস অনুযায়ী ভূমিকম্পের কারণ অনুসন্ধান এবং এ থেকে কিভাবে আমরা বাঁচতে পারি তার উপায় বের করি।

কেন এত ভূমিকম্প সংগঠিত হয়? এবং এথেকে পরিত্রাণের উপায়।

সকল প্রশংসা আল্লাহর জন্য, এবং শান্তি বর্ষিত হোক আল্লাহর রাসূলের, তাঁর পরিবারের উপর, তাঁর সাহাবাদের উপর এবং তাদের উপর যারা তাদের অনুসরণ করেন।

মহান আল্লাহ সর্বজ্ঞানী, তাঁর ইচ্ছা এবং তিনি যা কিছু প্রেরণ করবেন সে সকল বিষয়ে তিনিই সবকিছু জানেন এবং তিনি সর্বাধিক জ্ঞানী এবং সর্বাধিক অবহিত তাঁর আইন কানুন ও আদেশ সম্পর্কে। মহান আল্লাহ তাঁর বান্দাহদেরকে সতর্ক করার জন্য বিভিন্ন প্রকারের নিদর্শন সৃষ্টি করেন এবং বান্দাহর উপর প্রেরণ করেন যাতে করে তারা মহান আল্লাহ কর্তৃক তাদের উপর অর্পিত দায়িত্ব ও কর্তব্য সম্পর্কে সচেতন ও ভীত হয়। বান্দাহরা মহান আল্লাহর সাথে যা শিরক করে (অর্থাৎ, ইবাদত করার ক্ষেত্রে মহান আল্লাহর সাথে অংশিদারিত্ব করে) এবং তিনি যা করতে নিষেধ করেছেন তা থেকে বিরত থাকার জন্য তিনি এই নিদর্শন সমূহ প্রেরণ করেন যাতে করে তারা তাদের ভুল বুঝতে পারে, তাদের বোধদয় হয় এবং তাদের রবের দিকেই একনিষ্ঠভাবে ইবাদত করে।

মহান আল্লাহ বলেন:


“(আসলে) আমি ভয় দেখানোর জন্যই (তাদের কাছে আযাবের) নিদর্শনসমূহ পাঠাই” ( সূরা ইসরা ১৭:৫৯)

 

 

“অচিরেই আমি আমার (কুদরতের) নিদর্শনসমূহ দিগন্ত বলয়ে প্রদর্শন করবো এবং তাদের নিজেদের মধ্যেও (তা আমি দেখিয়ে দিবো), যতোক্ষণ পর্যন্ত তাদের উপর এটা পরিস্কার হয়ে যায় যে, এই (কুরআনই মূলত) সত্য; একথা কি যথেষ্ট নয় যে, তোমার মালিক সবকিছু সম্পর্কে অবহিত?” (সূরা হা-মীম আস সিজদা : ৫৩)


“বল: আল্লাহ তাআলা তোমাদের উপর, তোমাদের উপর থেকে (আসমান থেকে) অথবা তোমাদের পায়ের নীচ থেকে আযাব পাঠাতে সক্ষম, অথবা তিনি তোমাদের দল-উপদলে বিভক্ত করে একদলকে আরেক দলের শাস্তির স্বাদ গ্রহণ করাতেও সম্পূর্ণরূপে সক্ষম।” (সূরা আল আনআম : ৬৫)

Continue reading