ইসলামের হক حق المسلم


ইসলামের হক    حق المسلم
عن أبي هريرة- رَضِيَ اللهُ عَنْهُ – قَالَ : قَالَ رَسُوْلُ اللهِ- صَلّى اللهُ عَلَيْهِ وَ سَلَّمَ- حَقُّ الْمُسْلِمِ عَلَى الْمُسْلِمِ سِتٌّ، قِيْلَ: مَا هُنَّ يَا رَسُوْلَ اللهِ ؟ قَالَ إذَا لَقِيْتَهُ فَسَلِّمْ عَلَيْهِ، وَ إذَا دَعَاكَ فَأجِبْهُ، وَ إذَا اسْتَنْصَحَكَ فَانْصَحْ لَهُ، وَ إذَا عَطَسَ فَحَمِدَ اللهَ فَشَمِّتْهُ، وَ إذَا مَرِضَ فَعُدْهُ، وَ إذَا مَاتَ فَاتَّبِعْهُ. رَوَاهُ مُسْلِمٌ(৪০২৩)
আবু হুরাইরা রা. বর্ণনা করেন যে রাসূল সাল¬াল¬াহু আলাইহি ওয়াসাল¬াম বলেছেন, একজন মুসলমানের উপর অপর মুসলমানের ছয়টি হক রয়েছে। প্রশ্ন করা হল, হে আল¬াহর রাসূল ! সেগুলো কি কি ? বললেন, (এক) সাক্ষাতে সালাম বিনিময় করা, (দুই) আমন্ত্রণ করলে গ্রহণ করা, (তিন) উপদেশ চাইলে উপদেশ দেওয়া, (চার) হাঁচি দিয়ে আলহামদুলিল¬াহ বললে উত্তরে ইয়ারহামুকাল¬াহ বলা, (পাঁচ) অসুস্থ হলে সাক্ষাত করে খোঁজ খবর নেয়া (ছয়) মৃত্যুবরণ করলে জানাজায় উপস্থিত থাকা।
আভিধানিক ব্যাখ্যা
حَقُّ : হক বলতে ঐ সব কাজ বুঝানো হয়, যা পালন করা অপরিহার্য। যথা ফরজ, ওয়াজিব ও সুন্নতে মোয়াক্কাদা—ইত্যাদি।
سِتٌّ : এ হাদিসে মুসলমানের ছয়টি হকের কথা বলা হয়েছে। তার অর্থ এই নয় যে মুসলমানের হক ছয়টির মাঝেই সীমাবদ্ধ। বরং উদ্দেশ্য হল, মুসলমানের হকসমূহের অন্যতম ছয়টি এই…। অন্যথায় বিশুদ্ধ হাদিসে আলোচিত হক ছাড়াও অন্য হকের কথা বলা হয়েছে।
إذَا لَقِيْتَهُ فَسَلِّمْ عَلَيْهِ: যদি মুসলমানের সাথে সাক্ষাৎ হয়, অথবা তার ঘরে প্রবেশের প্রয়োজন হয়। তাহলে তাকে বল—السلام عليكم و رحمة الله و بركاته
و السلام: এটা আল¬াহর গুণবাচক নাম। অর্থাৎ, হে মোমিন তুমি আল¬াহর আশ্রয়ে থাক। কোন কোন আলেম বলেছেন, السلام অর্থাৎ নিরাপত্তা। তখন পূর্ণ অর্থ হবে—হে মোমিন ! তোমার জন্য আল¬াহর নিরাপত্তা অনিবার্য হোক।
وَ إذَا دَعَاكَ অর্থাৎ শরিয়ত সম্মত কোন অনুষ্ঠানে আমন্ত্রণ জানালে তা গ্রহণ কর। যেমন অলিমা বা বউভাত—ইত্যাদি।
وَ إذَا اسْتَنْصَحَكَ فَانْصَحْ لَهُ : অর্থাৎ যদি কেউ উপদেশ চায় তাহলে উপদেশ দাও। হাদিসের বাহ্যিক অর্থে প্রতীয়মান হয় যে, উপদেশপ্রার্থীকে উপদেশ প্রদান করা ফরজ। আর যে প্রার্থী নয়, তাকে উপদেশ প্রদান মানদুব তথা নফল। যেহেতু তা ভাল কাজের পথ প্রদর্শনের অন্তর্গত।
فَشَمِّتْهُ কোন কোন বর্ণনায় الشين এর স্থলে السين দ্বারা বলা হয়েছে। অর্থাৎ হাঁচি দেয়া ব্যক্তির জন্য আল¬াহর নিকট দোয়া করা।
فَعُدْهُ অর্থাৎ অসুস্থ মুসলমানের সাথে সাক্ষাত করে খোঁজ খবর গ্রহণ কর।
وَ إذَا مَاتَ فَاتَّبِعْهُ মুসলমানের মৃত্যুর সংবাদ পেলে তার নামাজে জানাজায় অংশগ্রহণ কর। এখানে আল¬াহর রাসূল উম্মতকে নামাজে জানাজায় অংশগ্রহণের প্রতি উৎসাহিত করেছেন।

Continue reading

“কালেমা” মেনে চলার শর্তাবলী


এক : কালেমা তাইয়েবার অর্থ জানা। অর্থাৎ এ কালেমার দুটো অংশ রয়েছে তা পরিপূর্ণভাবে জানা।

সে দুটো অংশ হলো:

১.    কোন হক মা’বুদ নেই

২.    আল্লাহ ছাড়া (অর্থাৎ তিনিই শুধু মা’বুদ)

দুই : কালেমা তাইয়েবার উপর বিশ্বাস স্থাপন করা।

অর্থাৎ সর্ব-প্রকার সন্দেহ ও সংশয়মুক্ত পরিপূর্ণ বিশ্বাস থাকা।

তিন : কালেমার উপর এমন একাগ্রতা ও নিষ্ঠা রাখা, যা সর্বপ্রকার শিরকের পরিপন্থী।

চার : কালেমাকে মনে প্রাণে সত্য বলে জানা, যাতে কোন প্রকার মিথ্যা বা কপটতা না থাকে।

পাঁচ : এ কালেমার প্রতি ভালবাসা পোষণ এবং কালেমার অর্থকে মনে প্রাণে মেনে নেয়া ও তাতে খুশী হওয়া।

ছয় : এই কালেমার অর্পিত দায়িত্ব সমূহ মেনে নেয়া অর্থাৎ এই কালেমা কর্তৃক আরোপিত ওয়াজিব কাজসমূহ শুধুমাত্র আল্লাহর জন্য এবং তাঁরই সন্তুষ্টির নিমিত্তে সমাধা করা।

সাত :মনে-প্রাণে এই কালেমাকে গ্রহণ করা যাতে কখনো বিরোধিতা করা না হয়।

Continue reading

হৃদয়সংলগ্ন ত্রিশটি আমল


১- আল্লাহ তাআলার উপর ঈমান আনা

আল্লাহকে বিশ্বাস করা এবং আল্লাহর উপর ঈমান আনার অর্থ শুধু আল্লাহ তাআলার অস্তিত্ব স্বীকার করা নয়; বরং অস্তিত্বের প্রতি বিশ্বাসের সঙ্গে সঙ্গে তিনি যে অনাদি, অনন্ত, চিরঞ্জীব তা স্বীকার করা। তার সিফাত অর্থাৎ মহৎ গুণাবলি স্বীকার করা এবং তিনি যে এক, অদ্বিতীয়, সর্বশক্তিমান ও দয়াময় এটাও স্বীকার করা এবং তিনি ব্যতীত অন্য কেউ ইবাদতের যোগ্য নয় একথা বিশ্বাস করা।
২- সবই আল্লাহ তাআলার সৃষ্ট এর উপর ঈমান রাখা
প্রত্যেক মুসলমানকে এ বিষয়ে অকাট্য বিশ্বাস ও ঈমান রাখতে হবে যে, ভাল-মন্দ ছোট বড় সমস্ত বিষয় ও বস্তুর সৃষ্টিকর্তা একমাত্র আল্লাহ তাআলা। সৃষ্টিকর্তা হিসেবে একমাত্র আল্লাহ ব্যতীত অন্য কেউ নেই।

৩- ফেরেশতা সম্পর্কে ঈমান রাখা
ফেরেশতাগণ নিস্পাপ, তারা আল্লাহর প্রিয় ও ফরমাবরদার বান্দা। কোন কাজেই তারা বিন্দুমাত্র নাফরমানি করেনা এবং তাদের আল্লাহপ্রদত্ব ক্ষমতাও অনেক বেশি। আল্লাহ তাআলা তাদের উপর অনেক জিম্মাদারি অর্পণ করেছেন।
Continue reading

ক্বিয়ামতের ভয়াবহতা


মুহাম্মাদ শফীকুল ইসলাম

জন্মের মাধ্যমে জীবনের শুরু আর মৃত্যুর মাধ্যমে ইহজীবনের পরিসমাপ্তি এবং পরকালীন জীবনের যাত্রা আরম্ভ হয়। কবর বা বারযাখী জীবনের পরে মানুষ ক্বিয়ামতে পার্থিব জীবনের কর্মের হিসাব দিয়ে অনন্ত জীবনে সুখ-শান্তি কিংবা আযাব-শাস্তি  লাভ করবে। আর সেই অনন্ত জীবনের প্রবেশ দ্বার হচ্ছে ক্বিয়ামত। এটা এক ভয়াবহ বিষয়, এক কঠিনতম স্থান। ক্বিয়ামতের ভয়াবহতা থেকে মানুষ যাতে সতর্ক-সাবধান হয়, এজন্য আলোচ্য নিবন্ধের অবতারণা।
ক্বিয়ামত কখন সংঘটিত হবে?
ক্বিয়ামত সংঘটিত হওয়ার সংবাদ কেবলমাত্র আল্লাহ তা‘আলা জানেন। তিনি বলেন, يَسْأَلُوْنَكَ عَنِ السَّاعَةِ أَيَّانَ مُرْسَاهَا قُلْ إِنَّمَا عِلْمُهَا عِنْدَ رَبِّيْ لاَ يُجَلِّيهَا لِوَقْتِهَا إِلاَّ هُوَ ثَقُلَتْ فِي السَّمَاوَاتِ وَالْأَرْضِ لاَ تَأْتِيْكُمْ إِلاَّ بَغْتَةً يَسْأَلُوْنَكَ كَأَنَّكَ حَفِيٌّ عَنْهَا قُلْ إِنَّمَا عِلْمُهَا عِنْدَ اللهِ وَلَـكِنَّ أَكْثَرَ النَّاسِ لاَ يَعْلَمُوْنَ-
‘আপনাকে লোকেরা জিজ্ঞেস করে, ক্বিয়ামত কখন সংঘটিত হবে? আপনি বলে দিন, এ খবর তো আমার পালনকর্তার নিকটেই রয়েছে। তিনি তা অনাবৃত করে দেখাবেন নির্ধারিত সময়ে। আসমান ও যমীনের জন্য এটা অতি কঠিন বিষয়। তোমাদের উপর তা হঠাৎ এসে যাবে। তারা আপনাকে জিজ্ঞেস করতে থাকে, যেন আপনি তার অনুসন্ধানে লেগে আছেন। বলে দিন, এ সংবাদতো কেবল আল্লাহ্র নিকটেই রয়েছে। কিন্তু তা অধিকাংশ লোক উপলব্ধি করে না’ (আ‘রাফ ১৮৭)। ক্বিয়ামত কখন, কোন তারিখে সংঘটিত হবে তা নির্দিষ্ট করে না জানা গেলেও তা সংঘটিত হওয়ার দিন সম্পর্কে হাদীছ এসেছে,
عَنْ أَبِيْ هُرَيْرَةَ قَالَ قَالَ رَسُوْلُ اللهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ خَيْرُ يَوْمٍ طَلَعَتْ فِيْهِ الشَّمْسُ يَوْمُ الْجُمُعَةِ فِيْهِ خُلِقَ آدَمُ وَفِيْهِ أُهْبِطَ وَفِيْهِ تِيْبَ عَلَيْهِ وَفِيْهِ مَاتَ وَفِيْهِ تَقُوْمُ السَّاعَةُ، وَمَا مِنْ دَابَّةٍ إِلاَّ وَهِيَ مُسِيْخَةٌ يَوْمَ الْجُمُعَةِ مِنْ حِيْنَ تُصْبِحُ حَتَّى تَطْلُعَ الشَّمْسُ شَفَقًا مِنَ السَّاعَةِ إِلاَّ الْجِنَّ وَالْإِنْسَ وَفِيْهِ سَاعَةٌ لَا يُصَادِفُهَا عَبْدٌ مُسْلِمٌ وَهُوَ يُصَلِّي يَسْأَلُ اللهَ حَاجَةً إِلاَّ أَعْطَاهُ إِيَّاهَا-
আবু হুরায়রা (রাঃ) থেকে বর্ণিত তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ (ছাঃ) বলেছেন,  ‘সূর্য উদিত হয় এমন সকল দিন অপেক্ষা জুম‘আর দিন উত্তম। এ দিনে আদম (আঃ)-কে সৃষ্টি করা হয়েছে। এ দিনেই তাঁকে দুনিয়াতে ক সাগ নামিয়ে দেয়া হয়েছে। এ দিনেই তাঁর তওবা কবুল করা হয়েছে। এ দিনেই তিনি মৃত্যুবরণ করেছেন এবং এ দিনেই ক্বিয়ামত সংঘটিত হবে। ক্বিয়ামত সংঘটিত হওয়ার ভয়ে জুম‘আর দিন ফজর হ’তে সূর্যোদয় পর্যন্ত জ্বিন ও মানুষ ব্যতীত সকল প্রাণী চিৎকার করতে থাকে। জুম‘আর দিন এমন একটা সময় আছে, যদি কোন মুসলমান ছালাতরত অবস্থায় তার নাগাল পায় এবং আল্লাহ্র নিকট কিছু চায়, তাহ’লে নিশ্চয়ই আল্লাহ তাকে তা দান করবেন’।

Continue reading

আল-কোরআনুল কারীম :মর্যাদা, শিক্ষা ও বাস্তবায়নের প্রয়োজনীয়তা : পর্ব-৩


তিলাওয়াতের আদব ও আহকাম :

১. ইখলাস-সুতরাং লোকের প্রশংসা ও বাহবা কুড়ানোর উদ্দেশ্যে তিলাওয়াত করা যাবে না। এবং একে জীবিকা নির্বাহের উপলক্ষণও বানানো যাবে না। বরং তিলাওয়াত কালে এ অনুভূতি ও আগ্রহ নিয়ে তিলাওয়াত করতে হবে যে, মহান আল্লাহ তাআলা তার মহান কালামের মাধ্যমে তাকে সম্বোধন করছেন। একাগ্রতা ও চিন্তা গবেষণা বাদ দিয়ে শুধু সময় কাটানো এবং সুন্দর কণ্ঠের ক্বারীদের মিষ্টি আওয়াজ উপভোগ করার উদ্দেশ্যে তিলাওয়াত করা ও শোনা-কোনটিই জায়েজ নেই।

নবী আকরাম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন:

اقرؤوا القرآن، وابتغوا به الله عز وجل، من قبل أن يأتي قوم يتعجلون ولايتأجلون. رواه الإمام أحمد.

তোমরা কোরআন পড় এবং এর মাধ্যমে আল্লাহর সন্তুষ্টি কামনা কর ; কারণ ভবিষ্যতে এমন এক সম্প্রদায়ের আবির্ভাব ঘটবে যারা কোরআনের দ্বারা দুনিয়ার সুখ অন্বেষণ করবে। পরকালের সুখ কামনা করবে না। মুসনাদে ইমাম আহমদ।

২. মিসওয়াক করা। রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন-মিসওয়াকের মাধ্যমে তোমার স্বীয় মুখ সুগন্ধি যুক্ত কর ; কেননা এটি কোরআনের রাস্তা।

৩. পবিত্রতা অর্জন করা : এটি আল্লাহ তাআলার কালামের মর্যাদা প্রদান ও সম্মান প্রদর্শন। অপবিত্রাবস্থায় গোসল না করে কোরআন তিলাওয়াত করা যাবে না। পানি না থাকলে বা অসুস্থতা ও এ জাতীয় কোন কারণে ব্যবহারে অক্ষম হলে তায়াম্মুম করবে। অপবিত্র ব্যক্তির পক্ষে আল্লাহর জিকির এবং কোরআনের সাথে সামঞ্জস্যশীল বাক্যাবলীর মাধ্যমে দোআ করা জায়েজ। তবে ঐ বাক্যের মাধ্যমে তিলাওয়াত উদ্দেশ্য হওয়া যাবে না, উদ্দেশ্য হবে শুধু দোআ। যেমন-বলল :

لا إله إلا أنت سبحانك إني كنت من الظالمين.

৪. তিলাওয়াতের জন্য অন্যায় অশ্লীল ও অনর্থক কথা-বার্তা এবং হৈ চৈ মুক্ত-পাশাপাশি কোরআনের ভাব মর্যাদার সাথে সংগতিপূর্ণ স্থান নির্বাচন করা। সুতরাং অপরিচ্ছন্ন নোংরা পরিবেশে এবং কোরআন শোনার প্রতি অমনোযোগী সমাবেশে তিলাওয়াত করবে না। কারণ এতে কোরআনের অমর্যাদা হয়। অনুরূপভাবে শৌচাগার ইত্যাদিতেও কোরআন পড়া জায়েজ নেই। তিলাওয়াতের জন্য সর্বোত্তম স্থান হচ্ছে আল্লাহর ঘর মসজিদসমূহ-এতে একই সাথে তিলাওয়াত এবং মসজিদ অবস্থান উভয় সওয়াব পাওয়া যাবে। সাথে সাথে ফেরেশতাদের ইস্তিগফারে অন্তর্ভুক্ত হতে পারবে-যখন নামাজের অপেক্ষায় থাকবে অথবা নামাজ আদায় করার পর বসবে।

Continue reading

তাওহীদ (পর্ব ১)


তাওহীদের সংজ্ঞা

তওহিদ : আল্লাহ তাআলা মানুষের জন্য এক ও একক সর্বাধিপতি প্রতিপালক। তিনি রাজত্ব, সৃষ্টি, ধন-সম্পদ ও কর্তৃত্বের অধিপতি। এতে কোন অংশীদার নেই। এককভাবে তিনিই প্রভু। এবাদত, আনুগত্য, আশা-ভরসা, সাহায্য ও ফরিয়াদের ক্ষেত্রে অন্য কাউকে তার সাথে অংশীদার করা জায়েজ নেই। তিনি সুন্দর নামসমূহ ও মহান গুণাবলির অধিকারী, তার সদৃশ কোন জিনিস নেই। তিনি সর্ব-শ্রোতা ও সর্বদ্রষ্টা।

তাওহীদের মর্যাদা ও আলামত

১. তওহিদ আল্লাহ তাআলার নৈকট্য লাভ ও তার আনুগত্যের সর্বোত্তম ও সর্ব শ্রেষ্ঠ পদ্ধতি। এ তাওহীদের বার্তা দিয়েই তিনি রাসূলদের প্রেরণ করেছেন এবং এর ব্যাখ্যার জন্য কিতাব অবতীর্ণ করেছেন। এরশাদ হচ্ছে—

كِتَابٌ أَنْزَلْنَاهُ إِلَيْكَ لِتُخْرِجَ النَّاسَ مِنَ الظُّلُمَاتِ إِلَى النُّورِ. (سورة إبراهيم:১)

‘এটি একটি গ্রন্থ, যা আমি আপনার প্রতি নাজিল করেছি—যাতে আপনি মানুষকে অন্ধকার থেকে আলোর দিকে বের করে আনেন।’

অর্থাৎ শিরকের অন্ধকার হতে তাওহীদের আলোতে।

২. তিনি তাওহীদের পরীক্ষা নেয়ার লক্ষ্যে জিন জাতি, মানবজাতি, ইহকাল-পরকাল, জান্নাত-জাহান্নাম সৃষ্টি করেছেন। যে এ তাওহীদ গ্রহণ করবে সে সৌভাগ্যবান, চিরসুখী। আর যে তাওহীদ প্রত্যাখ্যান করবে সে হতভাগা, চির দুঃখী।

৩. তাওহীদ বিহীন আমল যত বড় কিংবা যত ভালই হোক—অগ্রাহ্য, পরিত্যক্ত ও মূল্যহীন। এরশাদ হচ্ছে—

وَلَوْ أَشْرَكُوا لَحَبِطَ عَنْهُمْ مَا كَانُوا يَعْمَلُونَ. (سورة الأنعام:৮৮)

‘যদি তারা শিরক করত, তবে তাদের কাজকর্ম তাদের জন্যে ব্যর্থ হয়ে যেত।’

৪. নবী-রাসূলগণ তাওহীদের অনুশীলন, বাস্তবায়ন ও প্রাতিষ্ঠানিক রূপ দিতে কষ্ট সহ্য করেছেন, তাদের অনুসারীগণ পরীক্ষার সম্মুখীন হয়েছেন। কেউ নিজের প্রাণ উৎসর্গ করেছেন। কেউ ত্যাগ করেছেন নিজের ধন-সম্পদ ও ইজ্জত ও মান-সম্ভ্রম। কেউ তার প্রয়োজনীয় আহার হতে বঞ্চিত হয়েছেন। কেউ বিসর্জন দিয়েছেন আল্লাহ তাআলার রাস্তায় নিজের আত্মমর্যাদা পর্যন্ত। কেউ স্বীয় দেশ ত্যাগে বাধ্য হয়েছেন…ইত্যাদি।

Continue reading

তাওহীদ (পর্ব ২)


তাওহীদের প্রকার :
ওলামায়ে কেরাম তওহিদকে দু’ভাগে ভাগ করেছেন :
প্রথমত : আল্লাহ তাআলার সত্তা, তার কার্যাবলী, তার বিশেষ্য ও বিশেষণ সমূহকে প্রতিষ্ঠিত করণ ও প্রতিপন্নকরণ। এ প্রকার তওহিদকে ওলামায়ে কেরাম নামকরণ করেছেন- توحيد المعرفة والإثبات হিসেবে। (অর্থ:আল্লাহ তাআলার পরিচয় লাভ করা। তার প্রতিনিধি হিসেবে তদীয় সমস্ত বিধানাবলী মননে ও শরীরে, নিজের ভিতর ও অন্যের ভিতর সফল রূপায়ণ ও যথার্থ বাস্তবায়ন করা।)
কতেক ওলামায়ে কেরাম এ প্রকার তওহিদকে আবার দু’ভাগে ভাগ করেছেন:
১.  (توحيد الربوبية)তওহিদুর রুবুবিয়্যাত বা প্রভূত্ব ও প্রতিপালন সম্পর্কিত একত্ববাদ। অর্থাৎ আল্লাহ তাআলার অস্তিত্বের স্বীকারোক্তি প্রদান। তার প্রত্যক্ষ ও স্বনিয়ন্ত্রিত কর্মসমূহে একমাত্র তাকেই সম্পাদনকারী জ্ঞান করা। যেমন-রাজত্ব, পরিকল্পনা, সৃষ্টি, কল্যাণ-অকল্যাণ, রিজিক প্রদান, জীবিত করণ ও মৃত্যুদান ইত্যাদি কর্মসমূহ আল্লাহ তাআলা পরিকল্পনা করেন এবং প্রত্যক্ষ ও সক্রিয় ভাবে একক সিদ্ধান্তে সম্পাদন করেন।
আরেকটু পরিষ্কার করে বলা যায়:  توحيد الربوبية দুইটি বিষয়কে অন্তর্ভুক্ত করে। যথা:
(এক) আসমান-জমিন, জিন-ইনসান, পাহাড়-পর্বত, সাগর-মহাসাগর, আলো-বাতাস, চন্দ্র-সূর্যসহ যাবতীয় সৃষ্টি জীব একমাত্র আল্লাহ তাআলার পরিকল্পনা, তত্ত্বাবধান ও প্রত্যক্ষ নির্দেশ (كن) এর মাধ্যমে সৃজিত হয়েছে। এ ক্ষেত্রে কারো থেকে সামান্যতম সাহায্য গ্রহণ করা হয়নি।  সৃষ্টির অণুপরিমাণ বস্তেুর সৃষ্টির ভিতর কারো অংশীদারিত্বও নেই।
(দুই) যাবতীয় সৃষ্টিজগত পরিচালনা করার দায়িত্ব ও ক্ষমতা একমাত্র আল্লাহ তাআলা সংরক্ষণ করেন। ব্যক্তিগত, পারিবারিক, সামাজিক, রাষ্ট্রীয় ও আন্তর্জাতিক আইন-কানুন প্রণয়ন, মুসলমান-মুসলমান, মুসলমান-অমুসলমান, অমুসলমান-অমুসলমান এর ভিতর সম্পর্ক-উন্নয়ন, সম্পর্ক-ছিন্নকরণ, লেন-দেন, উদারনীতি-কঠোরনীতি নির্নয় করণ, এবং এ সমস্ত জিনিসের প্রকৃতি ও ধরন ব্যাখ্যা করণ, এককমাত্র আল্লাহ তাআলার অধিকার। এর বিরুদ্ধাচারন করে কেউ যদি নিজেকে আংশিক বা সামগ্রিক অধিকার সংরক্ষণকারী মনে করে- সে বাস্তবে রুবুবিয়্যাতের দাবীদার। কাফের। যেমন ফেরআউন, নমরূদ। আবার কেউ যদি এর সামগ্রিক বা আংশিক অধিকারের অন্য কাউকে অংশীদার মনে করে, সে মুশরিক বা পৌত্তলিক। যেমন- মক্কার আবু জাহেল, আবু লাহাব ও বর্তমান যুগের পৌত্তলিক সম্প্রদায়। হোক না সে অংশিদারকৃত বস্তু সামাজিক সংঘঠন, রাষ্ট্রিয় পার্লামেন্ট কিংবা আর্ন্তজাতিক কোন সংস্থা।

Continue reading

Islamic books, bangla/bengali islamic website, islami boi, free PDF bangla/bengali islamic books at http://islamhousebd.wordpress.com/


Islam House BD is free Islamic bangla pdf book site. We ask Allah Ta’alah to bless all Muslims in the world who struggle for truth, freedom and the establishment of our Deen. May Allah Almighty appeases the sufferings of all our brothers and sisters who are put to trials. Salafi bangla Islamic pdf book our main service. Taltala hut, Noapara, Ovaynagor,Jessore, Bangladesh, 7460.

http://islamhousebd.wordpress.com/

https://pdfislamicbook.wordpress.com/